অনলাইন সামাজিকতার নতুন রূপ 'ফেইসবুক'
ইদানীং ঢাকার ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে নতুন কিছু শব্দ যেমন - ওয়াল, সুপার ওয়াল, পোক, স্ট্যাটাস, ফ্রেন্ড লিস্ট ইত্যাদি খুব জনপ্রিয়। এ শব্দগুলোর প্রতিটির সঙ্গে যোগ রয়েছে যে অনলাইন কমিউনিটির তার নাম ফেইসবুক। বাংলাদেশে খুব সমপ্রতি প্রচার পাওয়া ওয়েবভিত্তিক এই সোশ্যাল ইউটিলিটি সারা দুনিয়াতেই তুমুল জনপ্রিয়। বিশেষ করে হাই স্কুল, কলেজ ও ইউনিভার্সিটি পড়-য়া এবং মাত্র পড়াশোনা শেষ করা ছেলেমেয়েদের ভেতর ফেইসবুকের ব্যবহার সর্বোচ্চ। (কেন জনপ্রিয়) আমেরিকা, কানাডা, সমগ্র ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, চায়না, জাপান, সিঙ্গাপুর পেরিয়ে আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার ভারত, বাংলাদেশ ও শ্রীলংকাতেও যেন প্রতিদিনই জনপ্রিয় থেকে জনপ্রিয়তর হচ্ছে এ ফেইসবুক।
ফেইসবুক কী?
একেবারে সহজ করে বলতে হলে- ফেইসবুক হচ্ছে একটি ওয়েবসাইট। কিনা অন্যান্য সাইট থেকে যেমন আপনি শুধু তথ্য পেয়ে থাকেন, ফেইসবুক ঠিক তেমনটি নয়। এটিকে বলতে পারেন একটি অনলাইন কমিউনিটি তথা ভার্চুয়াল সামাজিকতা পালনের উপায়।
ফেইসবুকে রেজিস্ট্রেশন করতে কোনো রকম টাকা-পয়সা লাগে না এবং রেজিস্ট্রি করার সঙ্গে সঙ্গেই আপনার জন্য নির্ধারিত হয়ে যাবে একটি নির্দিষ্ট পেইজ। এ পেইজে আপনি আপনার পুরো প্রফাইল অর্থাৎ বাইরের মানুষকে আপনি আপনার সম্পর্কে ঠিক যতোটুকু তথ্য জানাতে চান তার সবটুকু লিখে রাখতে পারেন এবং তা নিয়মিত আপডেট করতে পারেন। এর মাধ্যমেই আপনার বন্ধুরা আপনাকে খুঁজে নেবে এবং তাদের প্রফাইলের সঙ্গে তৈরি করে নেবে একটি ভার্চুয়াল সামাজিকবন্ধন।
অবসরে সামান্য কিছু সময় আপনার কম্পিউটারের সামনে বসেই আপনি দুনিয়ার যে কোনো প্রানে- থাকা আপনার বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, সহপাঠী, সহকর্মীদের সঙ্গে রাখতে পারবেন যোগাযোগ ও সমমনা মানুষদের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন একটি কমন প্ল্যাটফর্মে। খোঁজ পেতে পারেন অনেক আগে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলা কোনো পুরনো বন্ধুর। ফেইসবুকের ভৌগলিক নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়ে খুঁজে নতুন বন্ধুত্বও গড়ে তুলতে পারেন। তাদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারবেন যতো খুশি ছবি, ভিডিও ও বিভিন্ন লিংক। খোলাখুলি এবং ব্যক্তিগত দু’ভাবেই আদান-প্রদান করতে পারবেন কথাবার্তা। মতামত দিতে পারবেন তাদের ছবি ও ভিডিওগুলোতে এমনকি তাদের প্রফাইলেও।
ফেইসবুকের ধারণাটি কিন' একেবারে আনকোরা কিছু নয়। এ অনলাইন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংয়ের পথচলা শুরু অনেক আগেই ‘মাই স্পেস’ নামে আরেকটি ওয়েব ইউটিলিটির হাত ধরে। মাই স্পেসও ভালো জনপ্রিয়তা পেয়েছিল আমেরিকা ও কানাডার ব্যবহারকারীদের মাঝে। আমেরিকা মহাদেশের বাইরেও ছিল মাই স্পেসের প্রভাব। এরপর আসে ‘জরপিয়া’, ‘নেট লগ’ ও এমন আরো অনেক ওয়েব। কিন' আমাদের এ অঞ্চলে ওদের সবাইকে পেছনে ফেলে সর্বাধিক জনপ্রিয়তা পায় ‘হাই ফাইভ’ নামে অন্য একটি সাইট। কিন' ২০০৬ - এর শেষ দিক থেকেই ঢাকার ব্যবহারকারীদের ভেতর হিড়িক পড়ে যায় ফেইসবুকে রেজিস্ট্রার করার জন্য।
ফেইসবুকে রেজিস্ট্রি করতে হলে
প্রথম কথা, ফেইসবুকে যে কেউ রেজিস্ট্রি করতে পারেন। পাসপোর্ট, মাস্টার্স পরীক্ষার মার্কশিট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ওয়ার্ড কমিশনারের দেয়া চারিত্রিক সনদপত্র, এমন কিছুই লাগবে না। শুধু লাগবে একটি বৈধ ই-মেইল অ্যাড্রেস, ব্যাস। রেজিস্ট্রি করার সাথে সাথেই ফেইসবুকের সব ধরনের অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের উপযোগী একটি ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড আপনি পেয়ে যাবেন।
তারপর একটি ফর্ম ফিলাপ করে নিজের জন্য তৈরি করে নিতে পারেন প্রোফাইল। সেখানে থাকবে আপনার যাবতীয় তথ্য। আপনি কী পছন্দ করেন, কী কাজ করেন, আপনার প্রিয় বই, সিনেমা, গান কী এমনকি আপনার পুরো নাম, ঠিকানা, ফোন নাম্বারসহ সব বিষয়। তবে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। ফেইসবুকের জনপ্রিয় হওয়ার মূল কারণগুলোর একটা হচ্ছে তাদের নিরেট প্রাইভেসি। আপনার প্রাইভেসির সম্পূর্ণ কন্ট্রোল আপনার হাতে। আপনি নিজের হাতে নির্ধারিত করে দিবেন কে আপনার প্রোফাইল থেকে কতোটুকু তথ্য নিতে পারবে। আপনি সম্মতি না দিলে কেউ আপনাকে তার ফ্রেন্ড লিস্টে ঢোকাতেও পারবে না। একই ব্যাপার ঘটবে আপনার ছবি বা ভিডিওর ক্ষেত্রেও। কমেন্ট করা তো বহুদূর, আপনার পারমিশন ছাড়া কেউ আপনার ছবিগুলোও দেখতে পারবে না।
এসব ছাড়াও ফেইসবুকে রয়েছে প্রচুর অ্যাপ্লিকেশন, যার তালিকা অনেক লম্বা। এখানে সবচেয়ে জনপ্রিয় কয়েকটি অ্যাপ্লিকেশনের ব্যাপারে বর্ণনা করা হলো :
ফ্রেন্ড লিস্ট/নেটওয়ার্ক : রেজিস্ট্রেশন করার পরে আপনি ইমেইল লিস্টের মাধ্যমে বা ডাকনাম দিয়ে সার্চ দিয়ে খুঁজে নিতে পারেন আপনার পরিচিত কে কে ফেইসবুক ব্যবহার করছেন। তাদের কাছে পাঠিয়ে দিন আপনার ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট। যদি তারা আপনাকে তাদের বন্ধুর লিস্টে রাখতে চান তবে তারা সম্মতি জানালেই আপনারা দুজন যুক্ত হয়ে গেলেন একটি কমন নেটওয়ার্কে। একইভাবে কেউ যদি আপনাকে খুঁজে পায় তবে আপনার সম্মতিক্রমে তারাও আপনাকে যুক্ত করে নিতে পারবে তাদের ফ্রেন্ড লিস্টে। শুধু আপনার ফ্রেন্ডরাই দেখতে পারবে আপনার প্রোফাইল, ছবি ও অন্যান্য বৃত্তান-। একক বন্ধু সৃষ্টি ছাড়াও আপনি যোগ দিতে পারেন কোনো ভৌগলিক, একাডেমিক বা আপনার পেশাভিত্তিক যে কোনো ধরনের কমন নেটওয়ার্কে। আপনার সমমনা বন্ধুদেরও পেতে পারেন সেখানে।
ফ্রেন্ড ডিটেইল : পুরনো বন্ধুদের খুঁজে পাওয়া ছাড়া ফেইসবুকের সবচেয়ে মজার আরেকটি প্রাপ্তি হলো বন্ধুদের মাঝেই বন্ধুত্ব খুঁজে পাওয়া। যেমন ধরুন ঢাকার অনিকের সাথে খুব ভালো বন্ধুত্ব আপনার, আবার সুদূর বাজিতপুরের নাসেরকেও চেনেন আপনি। ফেইসবুকে আপনার ফ্রেন্ড লিস্টে তাদের নাম যোগ করলে একা একাই তৈরি হয়ে যাবে ‘কমন ফ্রেন্ড’-এর একটা বক্স। সেখানেই আপনি আবিষ্কার করবেন যে অনিক ও নাসের যে শুধু ভালো বন্ধু তাই নয়, ওরা একত্রে ৬ মাস এক অফিসে চাকরিও করেছে! কারণ ফেইসবুকের ফ্রেন্ড ডিটেইল অপশনের এটিও জানা যায় যে কে কার সাথে কিভাবে পরিচিত।
দি ওয়াল : মূলত আপনার প্রোফাইল পেজের একটা অংশই হচ্ছে আপনার ওয়াল। অনেকটা আমাদের ঢাকার পথে পথে দেওয়ালে চিকা মারার মতোই এখানে আপনার বন্ধুরা এসে যে কোনো কিছু লিখে যেতে পারে। হাই ফাইভ বা মাই স্পেসের সাথে ফেইসবুকের তফাৎ এখানেই। আপনার বন্ধুরা ছাড়া কেউ এখানে লিখতে পারবে না। তবে ওয়ালের লেখা বা কমেন্টসগুলো আপনার বাকি বন্ধুদের জন্য উন্মুক্ত অর্থাৎ সবাই পড়তে পারবে। আপনি চাইলে অ্যাক্টিভেট করে নিতে পারেন ওয়ালের মতো আরো কিছু অ্যাপ্লিকেশন, যেমন ফান ওয়াল, সুপার ওয়াল ইত্যাদি। এগুলোতে শুধু অক্ষর টাইপ করা ছাড়াও আপলোড করতে পারবেন ছবি, ভিডিও, অডিও ফাইল ইত্যাদি। চাইলে বাংলাতেও টাইপ করতে পারবেন সুপারওয়ালে।
গ্রুপ : ভৌগলিক, ধর্মীয়, একাডেমিক, রাজনৈতিক, পেশা ভিত্তিকসহ হাজার রকমের গ্রুপ আছে ফেইসবুকে। আপনি আপনার পছন্দ মত গ্রুপে মেম্বার হয়ে যান। সেখানে পাবেন আপনার পছন্দের সেই বিষয়ের ওপর নানান তথ্য ও একই বিষয়ে আগ্রহী অন্যান্য মেম্বারদের কমেন্টস ও আইডিয়া। আর কোন গ্রুপ যদি আপনার তেমন মনে না ধরে, তবে নিজেই তৈরী করে নিতে পারেন পছন্দমত গ্রুপ।
এমন শত শত এপ্লিকেশনে ঠাঁসা ফেসবুক। সবকিছুই আছে সেখানে। তার ভেতরে ঠিক যতোটুকু আপনার পছন্দের বা প্রয়োজন ততোটুকু রেখে বাকিটুকু বাদ দিয়ে দিন, আপনি হাতে পেয়ে যাবেন একেবার আপনার নিজস্ব একটি ওয়েব যার সাথে জড়িত আপনার বন্ধু-বান্ধব ও কাছের মানুষরা।
বড়ই অসি'র সময় এখন। সবাই ব্যস- যার যার কাজে। দারুণ মগ্ন নিজেকে নিয়ে। এমন সময়ে ফেসবুকের মতো একটি ছোট্ট সোশ্যল ইউটিলিটি দিয়ে আপনি পালন করে যেতে পারেন আপনার সামাজিক দায়িত্বের কিছুটা।
সাবধান! ফেইসবুকে ভাইরাস
জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ রক্ষার ওয়েবসাইট 'ফেইসবুক' -এ ইদানিং ভাইরাসের আনাগোনা শুরু হয়েছে। ভিডিও মেসেজ এর ছল ধরে ভাইরাসটি এরই মধ্যে কয়েক হাজার ব্যবহারকারীকে আক্রমন করেছে। খবর টাইমস অফ ইন্ডিয়ার।
ফেইসবুকের নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান মেক্স কেলি জানান, "মেসেজটি লিংক এর মাধ্যমে ইউটিউব ও গুগল'র ভিডিওর প্রচারনা চালাচ্ছিল।"
তিনি আরও জানান, যেসব ব্যবহারকারী লিংকগুলোতে ক্লিক করে নিম্নমানের সফটওয়্যার ডাউনলোড করেছে তারাও এই ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে।
ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভাইরাসটি শতকরা ০.০০২ ভাগেরও কম ব্যাবহারকারীকে আক্রান্ত করেছে। ফেইসবুকের ব্যাবহারকারী প্রায় ১২০ মিলিয়ন। সে হিসাবে আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজারের কিছু বেশি। ফেইসবুক ঐ লিঙ্ক-এ প্রবেশ বন্ধ করে দেয় এবং নিরাপত্তা জোরদার করতে তারা কাজ করে যাচ্ছে বলে জানায় ।
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক নিরাপত্তা সফটওয়ার তৈরির প্রতিষ্ঠান 'পিএলসি' তাদের ওয়েবসাইটে দেয়া এক বিবৃতিতে জানায়, যেসব ব্যাবহারকারীরা না বুঝে ভাইরাসটি ডাউনলোড করেছে তাদেরকে একটি ছবি দেখানো হয় যেখানে এক জোকার জিভ দেখিয়ে চোখ নাড়িয়ে ব্যঙ্গ করছে ।
ফেইসবুকের বর্তমান জনপ্রিয়তা সম্পর্কে ভার্জিনিয়া ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান কমস্কোর জানায়, ব্যক্তি মালিকানাধীন এই সাইটটির শুধু মে মাসেই ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ১২৩.৯ মিলিয়ন। যেখানে এর প্রধান প্রতিদ্বন্ধী 'মাইস্পেস'র মোট ব্যাবহারকারীর সংখ্যা ১১৪.৬ মিলিয়ন।
অনলাইন সামাজিকতার নতুন রূপ 'ফেইসবুক'
ইদানীং ঢাকার ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে নতুন কিছু শব্দ যেমন - ওয়াল, সুপার ওয়াল, পোক, স্ট্যাটাস, ফ্রেন্ড লিস্ট ইত্যাদি খুব জনপ্রিয়। এ শব্দগুলোর প্রতিটির সঙ্গে যোগ রয়েছে যে অনলাইন কমিউনিটির তার নাম ফেইসবুক। বাংলাদেশে খুব সমপ্রতি প্রচার পাওয়া ওয়েবভিত্তিক এই সোশ্যাল ইউটিলিটি সারা দুনিয়াতেই তুমুল জনপ্রিয়। বিশেষ করে হাই স্কুল, কলেজ ও ইউনিভার্সিটি পড়-য়া এবং মাত্র পড়াশোনা শেষ করা ছেলেমেয়েদের ভেতর ফেইসবুকের ব্যবহার সর্বোচ্চ। (কেন জনপ্রিয়) আমেরিকা, কানাডা, সমগ্র ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, চায়না, জাপান, সিঙ্গাপুর পেরিয়ে আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার ভারত, বাংলাদেশ ও শ্রীলংকাতেও যেন প্রতিদিনই জনপ্রিয় থেকে জনপ্রিয়তর হচ্ছে এ ফেইসবুক।
ফেইসবুক কী?
একেবারে সহজ করে বলতে হলে- ফেইসবুক হচ্ছে একটি ওয়েবসাইট। কিনা অন্যান্য সাইট থেকে যেমন আপনি শুধু তথ্য পেয়ে থাকেন, ফেইসবুক ঠিক তেমনটি নয়। এটিকে বলতে পারেন একটি অনলাইন কমিউনিটি তথা ভার্চুয়াল সামাজিকতা পালনের উপায়।
ফেইসবুকে রেজিস্ট্রেশন করতে কোনো রকম টাকা-পয়সা লাগে না এবং রেজিস্ট্রি করার সঙ্গে সঙ্গেই আপনার জন্য নির্ধারিত হয়ে যাবে একটি নির্দিষ্ট পেইজ। এ পেইজে আপনি আপনার পুরো প্রফাইল অর্থাৎ বাইরের মানুষকে আপনি আপনার সম্পর্কে ঠিক যতোটুকু তথ্য জানাতে চান তার সবটুকু লিখে রাখতে পারেন এবং তা নিয়মিত আপডেট করতে পারেন। এর মাধ্যমেই আপনার বন্ধুরা আপনাকে খুঁজে নেবে এবং তাদের প্রফাইলের সঙ্গে তৈরি করে নেবে একটি ভার্চুয়াল সামাজিকবন্ধন।
অবসরে সামান্য কিছু সময় আপনার কম্পিউটারের সামনে বসেই আপনি দুনিয়ার যে কোনো প্রানে- থাকা আপনার বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, সহপাঠী, সহকর্মীদের সঙ্গে রাখতে পারবেন যোগাযোগ ও সমমনা মানুষদের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন একটি কমন প্ল্যাটফর্মে। খোঁজ পেতে পারেন অনেক আগে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলা কোনো পুরনো বন্ধুর। ফেইসবুকের ভৌগলিক নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়ে খুঁজে নতুন বন্ধুত্বও গড়ে তুলতে পারেন। তাদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারবেন যতো খুশি ছবি, ভিডিও ও বিভিন্ন লিংক। খোলাখুলি এবং ব্যক্তিগত দু’ভাবেই আদান-প্রদান করতে পারবেন কথাবার্তা। মতামত দিতে পারবেন তাদের ছবি ও ভিডিওগুলোতে এমনকি তাদের প্রফাইলেও।
ফেইসবুকের ধারণাটি কিন' একেবারে আনকোরা কিছু নয়। এ অনলাইন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংয়ের পথচলা শুরু অনেক আগেই ‘মাই স্পেস’ নামে আরেকটি ওয়েব ইউটিলিটির হাত ধরে। মাই স্পেসও ভালো জনপ্রিয়তা পেয়েছিল আমেরিকা ও কানাডার ব্যবহারকারীদের মাঝে। আমেরিকা মহাদেশের বাইরেও ছিল মাই স্পেসের প্রভাব। এরপর আসে ‘জরপিয়া’, ‘নেট লগ’ ও এমন আরো অনেক ওয়েব। কিন' আমাদের এ অঞ্চলে ওদের সবাইকে পেছনে ফেলে সর্বাধিক জনপ্রিয়তা পায় ‘হাই ফাইভ’ নামে অন্য একটি সাইট। কিন' ২০০৬ - এর শেষ দিক থেকেই ঢাকার ব্যবহারকারীদের ভেতর হিড়িক পড়ে যায় ফেইসবুকে রেজিস্ট্রার করার জন্য।
ফেইসবুকে রেজিস্ট্রি করতে হলে
প্রথম কথা, ফেইসবুকে যে কেউ রেজিস্ট্রি করতে পারেন। পাসপোর্ট, মাস্টার্স পরীক্ষার মার্কশিট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ওয়ার্ড কমিশনারের দেয়া চারিত্রিক সনদপত্র, এমন কিছুই লাগবে না। শুধু লাগবে একটি বৈধ ই-মেইল অ্যাড্রেস, ব্যাস। রেজিস্ট্রি করার সাথে সাথেই ফেইসবুকের সব ধরনের অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের উপযোগী একটি ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড আপনি পেয়ে যাবেন।
তারপর একটি ফর্ম ফিলাপ করে নিজের জন্য তৈরি করে নিতে পারেন প্রোফাইল। সেখানে থাকবে আপনার যাবতীয় তথ্য। আপনি কী পছন্দ করেন, কী কাজ করেন, আপনার প্রিয় বই, সিনেমা, গান কী এমনকি আপনার পুরো নাম, ঠিকানা, ফোন নাম্বারসহ সব বিষয়। তবে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। ফেইসবুকের জনপ্রিয় হওয়ার মূল কারণগুলোর একটা হচ্ছে তাদের নিরেট প্রাইভেসি। আপনার প্রাইভেসির সম্পূর্ণ কন্ট্রোল আপনার হাতে। আপনি নিজের হাতে নির্ধারিত করে দিবেন কে আপনার প্রোফাইল থেকে কতোটুকু তথ্য নিতে পারবে। আপনি সম্মতি না দিলে কেউ আপনাকে তার ফ্রেন্ড লিস্টে ঢোকাতেও পারবে না। একই ব্যাপার ঘটবে আপনার ছবি বা ভিডিওর ক্ষেত্রেও। কমেন্ট করা তো বহুদূর, আপনার পারমিশন ছাড়া কেউ আপনার ছবিগুলোও দেখতে পারবে না।
এসব ছাড়াও ফেইসবুকে রয়েছে প্রচুর অ্যাপ্লিকেশন, যার তালিকা অনেক লম্বা। এখানে সবচেয়ে জনপ্রিয় কয়েকটি অ্যাপ্লিকেশনের ব্যাপারে বর্ণনা করা হলো :
ফ্রেন্ড লিস্ট/নেটওয়ার্ক : রেজিস্ট্রেশন করার পরে আপনি ইমেইল লিস্টের মাধ্যমে বা ডাকনাম দিয়ে সার্চ দিয়ে খুঁজে নিতে পারেন আপনার পরিচিত কে কে ফেইসবুক ব্যবহার করছেন। তাদের কাছে পাঠিয়ে দিন আপনার ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট। যদি তারা আপনাকে তাদের বন্ধুর লিস্টে রাখতে চান তবে তারা সম্মতি জানালেই আপনারা দুজন যুক্ত হয়ে গেলেন একটি কমন নেটওয়ার্কে। একইভাবে কেউ যদি আপনাকে খুঁজে পায় তবে আপনার সম্মতিক্রমে তারাও আপনাকে যুক্ত করে নিতে পারবে তাদের ফ্রেন্ড লিস্টে। শুধু আপনার ফ্রেন্ডরাই দেখতে পারবে আপনার প্রোফাইল, ছবি ও অন্যান্য বৃত্তান-। একক বন্ধু সৃষ্টি ছাড়াও আপনি যোগ দিতে পারেন কোনো ভৌগলিক, একাডেমিক বা আপনার পেশাভিত্তিক যে কোনো ধরনের কমন নেটওয়ার্কে। আপনার সমমনা বন্ধুদেরও পেতে পারেন সেখানে।
ফ্রেন্ড ডিটেইল : পুরনো বন্ধুদের খুঁজে পাওয়া ছাড়া ফেইসবুকের সবচেয়ে মজার আরেকটি প্রাপ্তি হলো বন্ধুদের মাঝেই বন্ধুত্ব খুঁজে পাওয়া। যেমন ধরুন ঢাকার অনিকের সাথে খুব ভালো বন্ধুত্ব আপনার, আবার সুদূর বাজিতপুরের নাসেরকেও চেনেন আপনি। ফেইসবুকে আপনার ফ্রেন্ড লিস্টে তাদের নাম যোগ করলে একা একাই তৈরি হয়ে যাবে ‘কমন ফ্রেন্ড’-এর একটা বক্স। সেখানেই আপনি আবিষ্কার করবেন যে অনিক ও নাসের যে শুধু ভালো বন্ধু তাই নয়, ওরা একত্রে ৬ মাস এক অফিসে চাকরিও করেছে! কারণ ফেইসবুকের ফ্রেন্ড ডিটেইল অপশনের এটিও জানা যায় যে কে কার সাথে কিভাবে পরিচিত।
দি ওয়াল : মূলত আপনার প্রোফাইল পেজের একটা অংশই হচ্ছে আপনার ওয়াল। অনেকটা আমাদের ঢাকার পথে পথে দেওয়ালে চিকা মারার মতোই এখানে আপনার বন্ধুরা এসে যে কোনো কিছু লিখে যেতে পারে। হাই ফাইভ বা মাই স্পেসের সাথে ফেইসবুকের তফাৎ এখানেই। আপনার বন্ধুরা ছাড়া কেউ এখানে লিখতে পারবে না। তবে ওয়ালের লেখা বা কমেন্টসগুলো আপনার বাকি বন্ধুদের জন্য উন্মুক্ত অর্থাৎ সবাই পড়তে পারবে। আপনি চাইলে অ্যাক্টিভেট করে নিতে পারেন ওয়ালের মতো আরো কিছু অ্যাপ্লিকেশন, যেমন ফান ওয়াল, সুপার ওয়াল ইত্যাদি। এগুলোতে শুধু অক্ষর টাইপ করা ছাড়াও আপলোড করতে পারবেন ছবি, ভিডিও, অডিও ফাইল ইত্যাদি। চাইলে বাংলাতেও টাইপ করতে পারবেন সুপারওয়ালে।
গ্রুপ : ভৌগলিক, ধর্মীয়, একাডেমিক, রাজনৈতিক, পেশা ভিত্তিকসহ হাজার রকমের গ্রুপ আছে ফেইসবুকে। আপনি আপনার পছন্দ মত গ্রুপে মেম্বার হয়ে যান। সেখানে পাবেন আপনার পছন্দের সেই বিষয়ের ওপর নানান তথ্য ও একই বিষয়ে আগ্রহী অন্যান্য মেম্বারদের কমেন্টস ও আইডিয়া। আর কোন গ্রুপ যদি আপনার তেমন মনে না ধরে, তবে নিজেই তৈরী করে নিতে পারেন পছন্দমত গ্রুপ।
এমন শত শত এপ্লিকেশনে ঠাঁসা ফেসবুক। সবকিছুই আছে সেখানে। তার ভেতরে ঠিক যতোটুকু আপনার পছন্দের বা প্রয়োজন ততোটুকু রেখে বাকিটুকু বাদ দিয়ে দিন, আপনি হাতে পেয়ে যাবেন একেবার আপনার নিজস্ব একটি ওয়েব যার সাথে জড়িত আপনার বন্ধু-বান্ধব ও কাছের মানুষরা।
বড়ই অসি'র সময় এখন। সবাই ব্যস- যার যার কাজে। দারুণ মগ্ন নিজেকে নিয়ে। এমন সময়ে ফেসবুকের মতো একটি ছোট্ট সোশ্যল ইউটিলিটি দিয়ে আপনি পালন করে যেতে পারেন আপনার সামাজিক দায়িত্বের কিছুটা।
জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ রক্ষার ওয়েবসাইট 'ফেইসবুক' -এ ইদানিং ভাইরাসের আনাগোনা শুরু হয়েছে। ভিডিও মেসেজ এর ছল ধরে ভাইরাসটি এরই মধ্যে কয়েক হাজার ব্যবহারকারীকে আক্রমন করেছে। খবর টাইমস অফ ইন্ডিয়ার।
ফেইসবুকের নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান মেক্স কেলি জানান, "মেসেজটি লিংক এর মাধ্যমে ইউটিউব ও গুগল'র ভিডিওর প্রচারনা চালাচ্ছিল।"
তিনি আরও জানান, যেসব ব্যবহারকারী লিংকগুলোতে ক্লিক করে নিম্নমানের সফটওয়্যার ডাউনলোড করেছে তারাও এই ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে।
ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভাইরাসটি শতকরা ০.০০২ ভাগেরও কম ব্যাবহারকারীকে আক্রান্ত করেছে। ফেইসবুকের ব্যাবহারকারী প্রায় ১২০ মিলিয়ন। সে হিসাবে আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজারের কিছু বেশি। ফেইসবুক ঐ লিঙ্ক-এ প্রবেশ বন্ধ করে দেয় এবং নিরাপত্তা জোরদার করতে তারা কাজ করে যাচ্ছে বলে জানায় ।
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক নিরাপত্তা সফটওয়ার তৈরির প্রতিষ্ঠান 'পিএলসি' তাদের ওয়েবসাইটে দেয়া এক বিবৃতিতে জানায়, যেসব ব্যাবহারকারীরা না বুঝে ভাইরাসটি ডাউনলোড করেছে তাদেরকে একটি ছবি দেখানো হয় যেখানে এক জোকার জিভ দেখিয়ে চোখ নাড়িয়ে ব্যঙ্গ করছে ।
ফেইসবুকের বর্তমান জনপ্রিয়তা সম্পর্কে ভার্জিনিয়া ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান কমস্কোর জানায়, ব্যক্তি মালিকানাধীন এই সাইটটির শুধু মে মাসেই ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ১২৩.৯ মিলিয়ন। যেখানে এর প্রধান প্রতিদ্বন্ধী 'মাইস্পেস'র মোট ব্যাবহারকারীর সংখ্যা ১১৪.৬ মিলিয়ন।
1.শীঘ্রই আসছে গুগল ওয়েভ
ওয়েবে যোগাযোগের দ্রুততম ও সর্বাধিক ব্যবহারবান্ধব অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন রিলিজ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে অনলাইন জায়ান্ট গুগল। বলা হচ্ছে, নতুন সেই অ্যাপ্লিকেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে গুগলের ইতিহাসের বৃহত্তম প্রোডাক্ট লঞ্চ। গুগল ওয়েভ নামের এই সেবার আগমনী বার্তা জানিয়েছে গুগলের অফিশিয়াল ব্লগ।
গুগল ওয়েভ একটি অনলাইন কমিউনিকেশন বা যোগাযোগের অ্যাপ্লিকেশন যার মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে বার্তা আদান-প্রদান, ফাইল কিংবা ছবি শেয়ারিং, ইমেইলের সুবিধা রয়েছে।
চলতি বছরের শেষের দিকে গুগলের এই নতুন ওয়েববেজড সেবাটি উন্মুক্ত করা হবে বলেই জানিয়েছে গুগল।
গুগলারদের মতে, চমৎকার অবিশ্বাস্য কিছু বৈশিষ্ট্যের জন্ম দিতে যাচ্ছে গুগল ওয়েভ, যা পুরো অনলাইন যোগাযোগ ব্যবস্থাকেই বদলে দেবে এবং যোগাযোগের মাধ্যমকে করে তুলবে আগের যে কোনো সময়ের চাইতে দ্রুত ও সহজতর।
অবশ্য গুগল ওয়েভে সুনির্দিষ্ট কী কী বিশেষত্ব থাকছে তা এখনো খুলে জানায়নি গুগল। তবে কিছু বৈশিষ্ট্যের কথা খোলাসা করেছে গুগল।
যেমন, গুগল ওয়েভের সব কর্মকাণ্ডই তাৎক্ষণিকভাবে আপডেট হবে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যখন কোনো বার্তা লিখছেন, আপনার ওয়েভের অন্যান্য ব্যবহারকারীরা তখনই তা দেখতে পারবেন। আবার গুগল ওয়েভকে চাইলে আপনি আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে যুক্ত করে দিতে পারবেন। এর ফলে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটের ভিজিটরদের সঙ্গে আপনার যোগাযোগের পথ উন্মুক্ত হবে।
ফেসবুক কিংবা আইগুগলের বৈশিষ্ট্যকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে তৃতীয় পক্ষের ডেভেলপারদের তৈরি অ্যাপ্লিকেশন কিংবা উইজেট। ঠিক তেমনি গুগল ওয়েভের জন্যও ডেভেলপাররা তৈরি করতে পারবেন যেকোনো ধরনের অ্যাপ্লিকেশন। এমনকি ছোটখাটো গেমসও তৈরি করা যাবে গুগল ওয়েভের জন্য।
আবার, উইকিপিডিয়ার মতোই ওয়েভে প্রকাশিত সকল তথ্যই থাকবে উন্মুক্ত। গুগল ওয়েভে যুক্ত যে কেউই তার পরিবর্তন বা সম্পাদন করতে পারবেন। ফলে তথ্য আপডেট করা হবে সহজ ও দ্রুততর। এছাড়াও যেকোনো ভুলভ্রান্তি খুব সহজেই দূর করা যাবে।
গুগল ওয়েভ আপনার লেখার বানান স্বয়ংক্রিয়ভাবে শুদ্ধ করে দিতে পারবে। একই ধরনের শব্দ থাকলে ওয়ার্ড সাজেশনের মাধ্যমে সঠিক শব্দটি বাছাইয়ের সুযোগ দেবে আপনাকে গুগল ওয়েভ।
বানান শুদ্ধকরণ ছাড়াও গুগল ওয়েভে রয়েছে অনুবাদের সুবিধা। প্রয়োজনে গুগল ওয়েভ আপনার বার্তাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করে আলোচনায় যুক্ত অন্যান্যদের সামনে প্রদর্শন করতে পারবে। এর ফলে গুগল ওয়েভের মাধ্যমে যোগাযোগের পরিধি হবে বিশ্বব্যাপী।
গুগল ওয়েভের মাধ্যমে আপনি সবার সঙ্গে ড্র্যাগ এন্ড ড্রপ করেই ফাইল শেয়ার করতে পারবেন। এটি যেমন দ্রুত তেমনি সহজ ও ব্যবহারবান্ধব।
এসব ছাড়াও আরো দারুণ সব চমক নিয়ে অপেক্ষা করছে গুগল ওয়েভ যা চলতি বছরের শেষের দিকে সবার জন্য উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে।
এফবিআই সম্প্রতি এক অন্ধ হ্যাকারকে গ্রেফতার করেছে যে কিনা কৈশোর থেকেই হ্যাকিং এর অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। সম্প্রতি একটি টেলিফোন সিস্টেম হ্যাকিং করার সময় ভ্যারাইজোন অনুসন্ধানকারী এক কর্মকর্তা তাকে হাতে নাতে ধরে ফেলেন, ফলাফল ১৩৫ মাসের হাজত বাস! খবর একাধিক মার্কিন ওয়েবসাইটের। "ক্ষুদে হ্যাকার" খ্যাত ম্যাথু ওয়াইম্যান নামের এই হ্যাকার ছিল এক টেলিফোন হ্যাকার দলের সদস্য, যাদের কাজই ছিল জাল বা নকল নাম্বার ব্যবহার করে ইমার্জেন্সি কল করা যাতে কল গ্রহণকারীরা বিভ্রান্তিতে পড়ে যেতেন এই মনে করে যে, কলটি বুঝি অন্য কোথাও থেকে এসেছে! এফবিআই ম্যাথু ওয়াইম্যান এর পেছনে লেগে ছিল যখন তার বয়স ছিল ১৫, কিন্তু অপ্রাপ্তবয়স্ক বলে সেসময় তাকে ছাড় দেয়া হয়েছিলো। কথায় বলে চোরের দশদিন আর সাধুর একদিন। দো ম্যাথিউ
3.খারাপ ফলাফল করছে ফেইসবুক ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীরা
ওহাইয়ো স্টেইট ইউনিভার্সিটি ও ওহাইয়ো ডমিনিকান ইউনিভার্সিটির দুজন গবেষকের গবেষণায় দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাদের দৈনিক ফেইসবুক ব্যবহারের প্রবণতা রয়েছে তারা পরীক্ষায় বেশ কম নাম্বার পাচ্ছে। দুই কোটি ব্যবহারকারীর সামাজিক নেটওয়ার্ক ফেইসবুকের দৈনিক ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ গ্রেইড পয়েন্ট তুলতেও সক্ষম হচ্ছে না বলে গবেষকরা জানান।
গবেষকদের একজন কারপিন্সকি জানান, “আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা ফেইসবুকে বেশি সময় দেয় পড়াশুনায় তারা খুবই কম সময় ব্যয় করে। বর্তমান প্রজন্মের সবার জন্যই এটি একটি আগ্রহের জায়গা।”
২১৯ জন শিক্ষার্থীর উপর এই গবেষণাটি চালানো হয়। যাদের মধ্যে স্নাতক এবং স্নাতোকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে নিয়মিত ফেইসবুক ব্যবহারকারীদের গড় জিপিএ ৩.০০ থেকে ৩.৫০ এর মধ্যে। যেখানে যারা নিয়মিত ফেইসবুক ব্যবহার করে না তাদের জিপিএ সাড়ে তিন থেকে চার।
4. বাংলাদেশে ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তি নিয়ে কর্মশালা
উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটকে সুলভ ও সহজে ব্যবহার করার জন্য তারবিহীন দ্রুতগতির ইন্টারনেট প্রযুক্তি ওয়াইম্যাক্স উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে। এই প্রযুক্তি তুলনামূলকভাবে কম ব্যান্ডউইথ ফ্রিকুয়েন্সির মাধ্যমে ব্যবহার করা যায়। একটি টাওয়ার দিয়ে ৪ থেকে ৫ বর্গকিলোমিটার এলাকায় তারবিহীন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া সম্ভব। মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও ডেস্কটপ কম্পিউটারে ক্ষদ্র একটি চিপ যুক্ত করে ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রামের সুবিধা বঞ্চিত দরিদ্র মানুষ বিশেষ করে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা সহজে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবে। সমপ্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত 'বাংলাদেশে ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তি : বর্তমান ও ভবিষ্যত' শীর্ষক দুই দিনব্যাপী এক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
৬টি বিশ্বখ্যাত তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এলকাটেল লুসেন্ট, সিসকো, হুয়াই, ইন্টেল, মটরোলা, নকিয়া সিমেন্স নেটওয়ার্ক এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) যৌথভাবে কর্মশালাটির আয়োজন করে। কর্মশালায় ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তির বিভিন্ন দিক নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
অন্যান্যের মধ্যে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়াইম্যাক্স ফোরাম অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান বহরত ভাটিয়া, এলকাটেল লুসেন্টের ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড বিভাগের মার্কেট এন্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর টনি কুলিন, সিসকো সিস্টেমসের সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার ভসু ভেঙ্গকাটকিশান, হুয়াই টেকনোলজি লিমিটেডের সিডিএমএ এন্ড ওয়াইম্যাক্স বিভাগের পরিচালক খোর ইউ শিন, ইন্টেল ওয়ার্ল্ড এহেড প্রোগ্রামের সিনিয়র সল্যুশন ইঞ্জিনিয়ার ড. বার্নড নর্ডাসিন, মটরোলা ভিয়েতনামের জেনারেল ম্যানেজার ড. রে ওয়েন এবং নকিয়া সিস্টেমস নেটওয়ার্কের এশিয়া প্যাসিফিক হেড অব টেকনোলজি মাইক মার্ফি প্রমুখ।
প্রবন্ধে ওয়াইম্যাক্স ও অন্যান্য সলিউশন, সেপক্ট্রাম এলোকেশন, ব্যবসা পদ্ধতি, কারিগরি ব্যবস্থাপনা, নীতিমালা, রুরাল কানেক্টিভিটি প্রভৃতি বিষয়ে আলোকপাত করা হয়।
কর্মশালায় বলা হয় বাংলাদেশ সমতল এবং এর আয়তনও ছোট। তাই সারা দেশকে ইন্টারনেট সংযোগের আওতায় আনা বেশ সহজ হবে। তবে শুধু শহরের মানুষ নয়, গ্রামের মানুষকেও এর আওতায় আনতে হবে। এসব বিষয় বিবেচনা করে বাংলাদেশে ওয়াইম্যাক্সের লাইসেন্স দেয়া হবে জানিয়েছে বিটিআরসি।
ড. জাফর ইকবাল বলেন, "আমরা ইন্টারনেটের সহজ প্রবাহ চাই। এক্ষেত্রে ওয়াইম্যাক্স হলো সবচেয়ে সহজ প্রযুক্তি। গ্রামের মানুষের কাছে এ প্রযুক্তি নিয়ে যেত হবে। তাদের মধ্যে ইন্টারনেট সেবা নিয়ে গেলে নতুন নতুন উদ্ভাবনী চিন্তা বেরিয়ে আসবে।"
তিনি কর্মশালার উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, এ দেশে এর আগে কোন লাইসেন্স দেয়ার আগে এভাবে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেয়া হয়নি।
কর্মশালার উদ্বোধন করে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম এ মালেক বলেন, "এর আগে আমরা নতুন প্রযুক্তির লাইসেন্স দিতে গিয়ে ভুল করেছি। আর যেন তেমন ভুল না হয়।"
এ বছরের মধ্যেই ওয়াইম্যাক্স চালু করা যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মনজুরুল আলম এ সময় বলেন, "ওয়াইম্যাক্স দেশে টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে বিপ্লব বয়ে আনবে। এর মাধ্যমে অল্প খরচে অনেক বেশি মানুষকে ইন্টারনেট সেবা দেয়া সম্ভব হবে।"
তিনি জানান, ওয়াইম্যাক্সের পরই ইন্টারনেটের অপর প্রযুক্তি থ্রি-জির লাইসেন্সের ব্যাপারে কার্যক্রম শুরু করবে বিটিআরসি।
কর্মশালায় ইন্টারনেট সেবা দাতা প্রতিষ্ঠান, মোবাইল অপারেটর, ফিক্সড ফোন (পিএসটিএন) অপারেটররা তাঁদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তাঁরা বলেন, দেশের গ্রামাঞ্চলের মানুষ গরিব। সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহও স্বাভাবিক নয়। অন্যদিকে নেটওয়ার্কের জন্য টাওয়ার বসানোও ব্যয়বহুল। ওয়াইম্যাক্স চালুর আগে এসব বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে বলে তারা মত দেন।
এসব বিষয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, কর্মশালার অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করা হবে। তা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ওয়েবসাইটে দিয়ে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের মতামত নেয়া হবে। এরপর একটি গণশুনানি করে নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে। এই লাইসেন্সের জন্য কাদের যোগ্য ভাবা হচ্ছে বা কী প্রক্রিয়ায় লাইসেন্স দেয়া হবে সে ব্যাপারে বিটিআরসি এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বলে জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান।
0 comments:
Post a Comment